ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ২ বছর ধরে স্কুলে আসেনি শিক্ষক ॥ বেতন তুলছেন প্রধান শিক্ষক

সোহেল রানা ॥
  • আপডেট সময় : ১২:৪১:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৪৫৭ বার পড়া হয়েছে

সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ ২ বছর ধরে ক্লাসে বা স্কুলে যান না। নিয়মিত হাজিরা খাতায় উপস্থিত। তার নামে নিয়মিত বেতন তুলছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

তার অনুউপস্থিতিতে একজন প্রক্সি শিক্ষক থাকলেও তিনিও প্রায় ৩মাস স্কুলে আসেন না। এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য, স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিক। প্রায় ১৪ বছর ধরে অসুস্থ। ভালোভাবে চলাচল করতে না পারায় ২ বছর ধরে স্কুলে যান না। চেকের পাতায় আগাম স্বাক্ষর করে রাখা হয়েছে প্রধান শিক্ষকের নিকট। প্রতি মাসেই বেতন ভাতা উত্তোলন হয়। তবে পুরো টাকা পান না তিনি। অর্ধেক বেতন নেন তিনি আর অর্ধেক প্রধান শিক্ষক। তার অনুউপস্থিতির কারণে সিরাজুল ইসলাম নামে একজনকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে ৫ হাজার টাকায় নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনিও প্রায় ৩মাস ধরে স্কুলে আসতে বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়াও কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।
সরেজমিন ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা মেলেনি বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের। তার অনুউপস্থিতিতে চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক সিরাজুল ইসলামকেও পাওয়া যায়নি। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আলিমুজ্জামান গড়িমসি করে কথা বলা বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলিমুজ্জামান বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিক অসুস্থ থাকার কারণে তিনি ২বছর স্কুলে আসেন না। মানবিক কারণে তার বেতন দেই। তার বেতন থেকে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে ৮ হাজার টাকা দিতে হয়। বাঁকী টাকা তার একাউন্টে চলে যায়। তবে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক কই জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন স্কুলে আসছে না। তবে ক্যামেরার সামনে বক্তব্যে চাইলে তিনি বলেন, এখন থেকে আর কাউকে বেতন দিবো না। আর কোন কথা বলতে রাজি হননি। অনেক অনুরোধ করলেও তার কথাই বলেননি। তবে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা বলেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ হাসিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস : Rajbaribd.com

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজবাড়ীতে ২ বছর ধরে স্কুলে আসেনি শিক্ষক ॥ বেতন তুলছেন প্রধান শিক্ষক

আপডেট সময় : ১২:৪১:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ ২ বছর ধরে ক্লাসে বা স্কুলে যান না। নিয়মিত হাজিরা খাতায় উপস্থিত। তার নামে নিয়মিত বেতন তুলছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

তার অনুউপস্থিতিতে একজন প্রক্সি শিক্ষক থাকলেও তিনিও প্রায় ৩মাস স্কুলে আসেন না। এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য, স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিক। প্রায় ১৪ বছর ধরে অসুস্থ। ভালোভাবে চলাচল করতে না পারায় ২ বছর ধরে স্কুলে যান না। চেকের পাতায় আগাম স্বাক্ষর করে রাখা হয়েছে প্রধান শিক্ষকের নিকট। প্রতি মাসেই বেতন ভাতা উত্তোলন হয়। তবে পুরো টাকা পান না তিনি। অর্ধেক বেতন নেন তিনি আর অর্ধেক প্রধান শিক্ষক। তার অনুউপস্থিতির কারণে সিরাজুল ইসলাম নামে একজনকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে ৫ হাজার টাকায় নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনিও প্রায় ৩মাস ধরে স্কুলে আসতে বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়াও কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।
সরেজমিন ইন্দুরদী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা মেলেনি বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের। তার অনুউপস্থিতিতে চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক সিরাজুল ইসলামকেও পাওয়া যায়নি। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আলিমুজ্জামান গড়িমসি করে কথা বলা বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলিমুজ্জামান বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষক অশোক কুমার ভৌমিক অসুস্থ থাকার কারণে তিনি ২বছর স্কুলে আসেন না। মানবিক কারণে তার বেতন দেই। তার বেতন থেকে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে ৮ হাজার টাকা দিতে হয়। বাঁকী টাকা তার একাউন্টে চলে যায়। তবে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক কই জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন স্কুলে আসছে না। তবে ক্যামেরার সামনে বক্তব্যে চাইলে তিনি বলেন, এখন থেকে আর কাউকে বেতন দিবো না। আর কোন কথা বলতে রাজি হননি। অনেক অনুরোধ করলেও তার কথাই বলেননি। তবে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা বলেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ হাসিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।