ঢাকা ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংকের ভল্ট থেকে পৌনে এক কোটি টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার

স্টাফ রিপোর্টার ॥
  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৬৬ বার পড়া হয়েছে

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ভল্ট থেকে ৭৫ লাখের বেশি টাকা নিয়ে ব্যাংকটির ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষ (৩৭) উধাও হয়েছেন। গত ২৯ জুলাই টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার পর থেকে ওই কর্মকর্তা ব্যাংকে আসেন না। তাঁর বাসা তালাবদ্ধ। মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ।

এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। বর্তমানে থানা ও ব্যাংকের উদ্যোগে ঘটনাটির তদন্ত চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানোয়ার হোসেন।

অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়। তিনি ২০১৯ সালে অগ্রণী ব্যাংকের মতলব উত্তর থানার ছেংগারচর বাজার শাখায় যোগদান করেন। তিনি উপজেলার ছেংগারচর এলাকায় ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজের পাশে একটি ভাড়া বাসায় একাকী থাকতেন।

ব্যাংকের কার্যালয় ও একাধিক গ্রাহক সূত্রে জানা গেছে, শেষ ২৮ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মস্থলে ছিলেন দীপঙ্কর ঘোষ। ওই দিন সন্ধ্যায় ব্যাংকের ভল্টে ১ কোটি ২ লাখ টাকা জমা রাখেন ব্যাংকটির শাখা কর্তৃপক্ষ। ভল্টের চাবি ছিল ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্করের কাছে। তিনি সেখান থেকে গোপনে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাসায় চলে যান। পরে বাসায় তালা দিয়ে ওই দিন রাতেই কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যান। ভাড়া বাসার মালিক বা আশপাশের কাউকেই কিছু বলেননি। পরদিন ২৯ জুলাই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও অন্যা কর্মকর্তারা এসে দেখেন, ব্যাংকের ভল্ট খোলা এবং সেখানে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নেই। এর পর থেকে দীপঙ্করের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। ২৯ জুলাই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংকের চাঁদপুর অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তপন চন্দ্র সরকারকে জানান। এরপর ২ আগস্ট ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যবস্থাপক থানায় মামলা করেন।

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। সেখানকার একজন জ্যেষ্ঠ প্রধান কর্মকর্তার (এসপিও) নেতৃত্বে ২ আগস্ট থেকে তদন্ত ও নিরীক্ষা (অডিট) চলছে। প্রাথমিক তদন্তে ওই ক্যাশ কর্মকর্তা ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সত্যতা পাওয়া গেছে।

অভিযোগের ব্যাপারে ওই কর্মকর্তার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার করলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। অগ্রণী ব্যাংকের চাঁদপুর অঞ্চলের ডিজিএম তপন চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা মিলেছে। চূড়ান্ত তদন্তে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যাংকিং আইনে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্থিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মতলব উত্তর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) সানোয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত চলছে। আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ট্যাগস : Rajbaribd.com

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্যাংকের ভল্ট থেকে পৌনে এক কোটি টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার

আপডেট সময় : ১২:৩৬:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ভল্ট থেকে ৭৫ লাখের বেশি টাকা নিয়ে ব্যাংকটির ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষ (৩৭) উধাও হয়েছেন। গত ২৯ জুলাই টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার পর থেকে ওই কর্মকর্তা ব্যাংকে আসেন না। তাঁর বাসা তালাবদ্ধ। মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ।

এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। বর্তমানে থানা ও ব্যাংকের উদ্যোগে ঘটনাটির তদন্ত চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানোয়ার হোসেন।

অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়। তিনি ২০১৯ সালে অগ্রণী ব্যাংকের মতলব উত্তর থানার ছেংগারচর বাজার শাখায় যোগদান করেন। তিনি উপজেলার ছেংগারচর এলাকায় ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজের পাশে একটি ভাড়া বাসায় একাকী থাকতেন।

ব্যাংকের কার্যালয় ও একাধিক গ্রাহক সূত্রে জানা গেছে, শেষ ২৮ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মস্থলে ছিলেন দীপঙ্কর ঘোষ। ওই দিন সন্ধ্যায় ব্যাংকের ভল্টে ১ কোটি ২ লাখ টাকা জমা রাখেন ব্যাংকটির শাখা কর্তৃপক্ষ। ভল্টের চাবি ছিল ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্করের কাছে। তিনি সেখান থেকে গোপনে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাসায় চলে যান। পরে বাসায় তালা দিয়ে ওই দিন রাতেই কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যান। ভাড়া বাসার মালিক বা আশপাশের কাউকেই কিছু বলেননি। পরদিন ২৯ জুলাই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও অন্যা কর্মকর্তারা এসে দেখেন, ব্যাংকের ভল্ট খোলা এবং সেখানে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নেই। এর পর থেকে দীপঙ্করের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। ২৯ জুলাই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংকের চাঁদপুর অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তপন চন্দ্র সরকারকে জানান। এরপর ২ আগস্ট ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যবস্থাপক থানায় মামলা করেন।

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। সেখানকার একজন জ্যেষ্ঠ প্রধান কর্মকর্তার (এসপিও) নেতৃত্বে ২ আগস্ট থেকে তদন্ত ও নিরীক্ষা (অডিট) চলছে। প্রাথমিক তদন্তে ওই ক্যাশ কর্মকর্তা ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সত্যতা পাওয়া গেছে।

অভিযোগের ব্যাপারে ওই কর্মকর্তার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার করলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। অগ্রণী ব্যাংকের চাঁদপুর অঞ্চলের ডিজিএম তপন চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা মিলেছে। চূড়ান্ত তদন্তে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যাংকিং আইনে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্থিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মতলব উত্তর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) সানোয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত চলছে। আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।