ঢাকা ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা- আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. ইউনূসের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥
  • আপডেট সময় : ০৬:১৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর আগে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। বৈঠক চলাকালে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর ফোন করে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি ড. ইউনূসকে জানান। তাৎক্ষণিক এ তথ্য সম্পাদকদের জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২৮ আগস্ট আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ৫৭ জনকে ক্ষমা করার অনুরোধ করেছিলেন ড. ইউনূস। নোবেল বিজয়ী ও বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমিরাত সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। ক্ষমাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের শিগগিরই দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমিরাতে বিক্ষোভ করেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। এর দায়ে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদে ৫৭ বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দেন দেশটির ফেডারেল আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

রাষ্ট্রদূত আবু জাফর জানান, ৫৭ বাংলাদেশির সাজা প্রত্যাহার এবং আমিরাত থেকে নির্বাসনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। কোনো ধরনের অর্থ ব্যয় ছাড়াই এসব প্রবাসী মুক্ত হয়েছেন। এখন তারা কীভাবে কারাগার থেকে বের হবেন, সে বিষয়ে কাজ করছে দূতাবাস।

সাজাপ্রাপ্তদের মুক্ত করার বিষয়ে আইনগত সহায়তা দিতে আমিরাতে স্বেচ্ছায় নিয়োজিত ছিলেন ওলোরা আফরিন নামে এক বাংলাদেশি আইনজীবী। তিনি জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫৭ বাংলাদেশির মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারা আবার দেশটিতে আসতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে আমিরাত সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া যাদের মামলা তদন্তাধীন, সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির আশা করছেন তিনি।

গতকাল আমিরাতের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষমা ঘোষণার পর তাদের সাজা বাস্তবায়ন বন্ধ রেখেছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। সেই সঙ্গে ৫৭ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর আদেশও দেওয়া হয়েছে।

আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেল ড. হামাদ আল শামসি বলেন, দেশে বসবাসরত সব বাসিন্দাকে আইন ও নিয়মকানুনের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। মতপ্রকাশের অধিকার আমিরাতে রাষ্ট্র ও আইনি কাঠামো দ্বারা সুরক্ষিত– সবাইকে তা মানতে হবে।

গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আশা করছি, ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশি আমিরাতে কাজ করতে পারবেন। আমিরাতের পক্ষ থেকে প্রবাসপ্রত্যাশীদের আইনকানুন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্যাগস : Rajbaribd.com

নিউজটি শেয়ার করুন

সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা- আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. ইউনূসের চিঠি

আপডেট সময় : ০৬:১৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর আগে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। বৈঠক চলাকালে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর ফোন করে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি ড. ইউনূসকে জানান। তাৎক্ষণিক এ তথ্য সম্পাদকদের জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২৮ আগস্ট আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ৫৭ জনকে ক্ষমা করার অনুরোধ করেছিলেন ড. ইউনূস। নোবেল বিজয়ী ও বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমিরাত সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। ক্ষমাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের শিগগিরই দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমিরাতে বিক্ষোভ করেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। এর দায়ে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদে ৫৭ বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দেন দেশটির ফেডারেল আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

রাষ্ট্রদূত আবু জাফর জানান, ৫৭ বাংলাদেশির সাজা প্রত্যাহার এবং আমিরাত থেকে নির্বাসনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। কোনো ধরনের অর্থ ব্যয় ছাড়াই এসব প্রবাসী মুক্ত হয়েছেন। এখন তারা কীভাবে কারাগার থেকে বের হবেন, সে বিষয়ে কাজ করছে দূতাবাস।

সাজাপ্রাপ্তদের মুক্ত করার বিষয়ে আইনগত সহায়তা দিতে আমিরাতে স্বেচ্ছায় নিয়োজিত ছিলেন ওলোরা আফরিন নামে এক বাংলাদেশি আইনজীবী। তিনি জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫৭ বাংলাদেশির মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারা আবার দেশটিতে আসতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে আমিরাত সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া যাদের মামলা তদন্তাধীন, সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির আশা করছেন তিনি।

গতকাল আমিরাতের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষমা ঘোষণার পর তাদের সাজা বাস্তবায়ন বন্ধ রেখেছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। সেই সঙ্গে ৫৭ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর আদেশও দেওয়া হয়েছে।

আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেল ড. হামাদ আল শামসি বলেন, দেশে বসবাসরত সব বাসিন্দাকে আইন ও নিয়মকানুনের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। মতপ্রকাশের অধিকার আমিরাতে রাষ্ট্র ও আইনি কাঠামো দ্বারা সুরক্ষিত– সবাইকে তা মানতে হবে।

গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আশা করছি, ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশি আমিরাতে কাজ করতে পারবেন। আমিরাতের পক্ষ থেকে প্রবাসপ্রত্যাশীদের আইনকানুন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।