4:12 pm, Thursday, 10 April 2025

রাজবাড়ীতে দুই ইউপি সদস্যকে বেঁধে নির্যাতন 

রাজবাড়ীতে পরকীয়ার অভিযোগ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় কমিটির (হারুন-রবি গ্রুপ) সহ-পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রায়হান খান বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল সরকার ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধরক মারপিট করছেন। রায়হানের মারধরে হেলেনা বেগম আল্লাহ্ আল্লাহ্ বলে চিৎকার করেন। এসময় রায়হান অকথ্য ভাষায় দুই ইউপি সদস্যকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে রায়হান হেলেনা বেগমের গলা থেকে চেইন খুলে নেন। চেইন খোলার সময় ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে বলতে শোন যায়, ‘এটি বিয়ের সময় আমার স্বামী আমাকে দিয়েছে।’ পাশ থেকে আরও এক যুবককে লাঠি হাতে তেড়ে এসে দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করতে দেখা যায়। ঘরের মধ্যে অনেক লোকজন দেখা যায়। কয়েকজনকে মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে ব্যস্ত দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগম স্থানীয় পূজা মণ্ডপে পূজা দেখেন। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উজ্জল সরকার মোটরসাইকেলে হেলেনা বেগমকে বাজিতপুর গ্রামে হেলেনার স্বামীর বাড়িতে নামিয়ে দিতে যান। এসময় রায়হান তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে আসেন। পরে তাদের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকান ঘরে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধরক মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে হেলেনা বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন খুলে নেয়ার পাশাপাশি দুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন রায়হান। হেলেনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও দুজনের মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা রায়হানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ ছিল।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

‘মানুষ একটা ভাল নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় আছে’ -আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম

রাজবাড়ীতে দুই ইউপি সদস্যকে বেঁধে নির্যাতন 

Update Time : 07:52:24 pm, Friday, 11 October 2024

রাজবাড়ীতে পরকীয়ার অভিযোগ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় কমিটির (হারুন-রবি গ্রুপ) সহ-পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রায়হান খান বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল সরকার ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধরক মারপিট করছেন। রায়হানের মারধরে হেলেনা বেগম আল্লাহ্ আল্লাহ্ বলে চিৎকার করেন। এসময় রায়হান অকথ্য ভাষায় দুই ইউপি সদস্যকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে রায়হান হেলেনা বেগমের গলা থেকে চেইন খুলে নেন। চেইন খোলার সময় ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে বলতে শোন যায়, ‘এটি বিয়ের সময় আমার স্বামী আমাকে দিয়েছে।’ পাশ থেকে আরও এক যুবককে লাঠি হাতে তেড়ে এসে দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করতে দেখা যায়। ঘরের মধ্যে অনেক লোকজন দেখা যায়। কয়েকজনকে মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে ব্যস্ত দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগম স্থানীয় পূজা মণ্ডপে পূজা দেখেন। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উজ্জল সরকার মোটরসাইকেলে হেলেনা বেগমকে বাজিতপুর গ্রামে হেলেনার স্বামীর বাড়িতে নামিয়ে দিতে যান। এসময় রায়হান তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে আসেন। পরে তাদের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকান ঘরে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধরক মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে হেলেনা বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন খুলে নেয়ার পাশাপাশি দুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন রায়হান। হেলেনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও দুজনের মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা রায়হানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ ছিল।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।