রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া হাচেন মোল্লার পাড়ায় চোরাই গরুর সন্ধানে গিয়ে ১০টি ষার গরু, একই নাম্বার প্লেটের দুটি মটরসাইকেলসহ গাজী হাওলাদার ওরফে গাজী কসাই (৭৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। সে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর দৌলতদিয়া হাচেন মোল্লা পাড়ার মৃত ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গাজী হাওলাদারের বাড়িতে প্রায় দশ ফুট দেয়াল দিয়ে চারদিকে ঘেরা। তিনি তার ছেলেসহ কসাইয়ের কাজ করেন। বেশির ভাগ সময় রাতের বেলায় তার বাড়িতে গরু জবাই করা হয়। এগুলো কেউ দেখতে পায় না। শুনেছি তার বাড়ির বিশাল গোয়াল ঘর এবং দশ ফুট দেয়াল দিয়ে আরেকটি ঘর করা আছে। ঘটনার দিন স্থানীয় সাংবাদিকসহ লোকজন তার বারান্দায় গরুর রান ঝুলে থাকতে দেখেন। এসময় স্বীকার করে রাতে একজনের একটা অসুস্থ গরু ১৮ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রাকিবুল ইসলাম জানান, গোয়ালন্দে সম্প্রতি কয়েকটি গরু চুরির মামল হওয়ায় এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় অনুসন্ধানে নামে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। এ প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে সন্দেহভাজন গরু চুরি চক্রের সদস্য গাজী হাওলাদার ওরফে গাজী কসাইয়ের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার বাড়িতে কতগুলো গরু রয়েছে জানতে চাইলে সে গরুর সংখ্যা বলতে না পাড়ায় সন্দেহ ঘনিভূত হয় এবং গাজির দেওয়া তথ্য মতে তার বাড়ি থেকে ১০টি ষার গরু ও একই নাম্বার প্লেটের দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় গরুগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাকিতে ক্রয় করে তার বাড়িতে এনে রেখেছেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আবু রাসেল মহোদয়কে অবগত করে ১০টি ষার গরু, দুটি মোটরসাইকেলসহ গাজী হাওলাদারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে গরুগুলোকে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এবং একটি মোটরসাইকেলের সঠিক তথ্যাদি দেওয়ায় ওই মোটরসাইকেলটি প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে নাম্বার বিহীন নীল রংয়ের আরটিআর ১৬০ সিসি মোটরসাইকেলের বিষয়ে সঠিক কোন তথ্যাদি দিতে না পারায় চোরাই হিসাবে মোটরসাইকেলটিসহ গোয়ালন্দ ঘাট থানায় গাজির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে পূর্বের গরু চুরির বিষয়ে মানিকগঞ্জ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানায় আরও দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গরু চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আর বিভিন্ন এলাকায় চুরি হওয়া গরুগুলো আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে কি-না অথবা জবাই করে মাংস হিসেবে বিক্রি করে ফেলেছে কি-না এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।