ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল অগ্নিদগ্ধ স্কুলছাত্র নিতুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
  • আপডেট সময় : ১২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ২৪১ বার পড়া হয়েছে

টানা ৮দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরেই গেল গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অগ্নিদগ্ধ নিতুন সরকার। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
স্কুলছাত্র নিতুন ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নিমাই সরকারের ছেলে। তারা স্বপরিবারে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হাসেম বেপারীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারী নিতুনদের ভাড়া বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সে সময় চার দিকে দাউ দাউ আগুন, মাঝখানে আটক পড়ে স্কুলছাত্র নিতুন। এক পর্যায়ে দেয়াল ভেঙে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নিতুনকে উদ্ধার করে একদল সাহসী মানুষ। বিষয়টি অনেকেই ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। মুহুর্তেই হাজার হাজার শেয়ার হয়ে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে হাজারো মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়ে যায়।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত কিশোর নিতুন সরকার (১৫) কে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া দীনবন্ধুর ঘর থেকে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন আশপাশের মোট চারটি ঘরে ছড়িড়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এরমধ্যেই ঘটে নিতুনের আটকে পড়ার ঘটনা সবার নজরে আসে। অগ্নিদগ্ধ নিতুনদের স্থায়ী বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলায়। আগুনে আরো দগ্ধ হয়েছেন ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোমা আক্তার (৪০) এবং অজ্ঞাতনামা আরো একজন। তাদেরকে গোয়ালন্দ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়া স্থানীয়রা জানান, তারা অন্য কোন উপায় না দেখে দেয়াল ভেঙে ভেতর থেকে আহত নিতুনকে উদ্ধার করে। তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি বলে ভালো লাগছিল। তবে আজ তার মৃত্যুর খবর শুনে এলাকায় শোকে ছায়া নেমে এসেছে।
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের টিম লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক শার্ট শার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আমরা সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সরকারী কামরুল ইসলাম কলেজ সংলগ্ন সড়কের মধ্যে বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী ফেলে রাখায় এবং অপরিকল্পিত একটি ভবনের দেয়ালের জন্য আমাদের অগ্নি নির্বাপন গাড়ি ঘটনাস্থলেই পৌছাতে পারেনি। পরে ফিতা টেনে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।

ট্যাগস : Rajbaribd.com

নিউজটি শেয়ার করুন

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল অগ্নিদগ্ধ স্কুলছাত্র নিতুন

আপডেট সময় : ১২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

টানা ৮দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরেই গেল গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অগ্নিদগ্ধ নিতুন সরকার। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
স্কুলছাত্র নিতুন ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নিমাই সরকারের ছেলে। তারা স্বপরিবারে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হাসেম বেপারীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারী নিতুনদের ভাড়া বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সে সময় চার দিকে দাউ দাউ আগুন, মাঝখানে আটক পড়ে স্কুলছাত্র নিতুন। এক পর্যায়ে দেয়াল ভেঙে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নিতুনকে উদ্ধার করে একদল সাহসী মানুষ। বিষয়টি অনেকেই ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। মুহুর্তেই হাজার হাজার শেয়ার হয়ে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে হাজারো মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়ে যায়।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত কিশোর নিতুন সরকার (১৫) কে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া দীনবন্ধুর ঘর থেকে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন আশপাশের মোট চারটি ঘরে ছড়িড়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এরমধ্যেই ঘটে নিতুনের আটকে পড়ার ঘটনা সবার নজরে আসে। অগ্নিদগ্ধ নিতুনদের স্থায়ী বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলায়। আগুনে আরো দগ্ধ হয়েছেন ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোমা আক্তার (৪০) এবং অজ্ঞাতনামা আরো একজন। তাদেরকে গোয়ালন্দ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়া স্থানীয়রা জানান, তারা অন্য কোন উপায় না দেখে দেয়াল ভেঙে ভেতর থেকে আহত নিতুনকে উদ্ধার করে। তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি বলে ভালো লাগছিল। তবে আজ তার মৃত্যুর খবর শুনে এলাকায় শোকে ছায়া নেমে এসেছে।
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের টিম লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক শার্ট শার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আমরা সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সরকারী কামরুল ইসলাম কলেজ সংলগ্ন সড়কের মধ্যে বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী ফেলে রাখায় এবং অপরিকল্পিত একটি ভবনের দেয়ালের জন্য আমাদের অগ্নি নির্বাপন গাড়ি ঘটনাস্থলেই পৌছাতে পারেনি। পরে ফিতা টেনে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।