6:07 pm, Thursday, 10 April 2025

রাজবাড়ীতে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় প্রতিবন্ধির স্বীকারোক্তি

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অফিস সংলগ্ন সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ রানাপদ সরকার (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে। সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়ীয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হাজির করা হলে সে আদালতে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় আদালত তাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করার আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অফিস সংলগ্ন সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্দিরে কমিটির উদ্যোগে একটি অস্থায়ী দুর্গাপূজা মন্দির তৈরী করা হয়। ওই মন্দিরে দেবী দুর্গাসহ ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরী করা হয়। গত ৮ অক্টোবর রাত দেড় টা হতে ওইদিন বেলা ১১ টার মধ্যে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মন্দিরের ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমার অংশবিশেষ ভেঙ্গে ফেলে। যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করাসহ তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার জিডি করা হয়। পরে এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় গত ৯ অক্টোবর মামলা দায়ের করা হয়।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীনের সার্বিক দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী সদর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম মামলার রহস্য উদঘাটনের কাজে নামে। অনুসন্ধান ও তদন্তের একপর্যায়ে পূজা মন্ডপসহ সংলগ্ন স্থানের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণকালে কমলা রংয়ের টি-শার্ট এবং কালো ট্রাউজার পরিহিত একজন ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্স অভিযান পরিচালনা করে গত ৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টার সময় রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়ীয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে রানাপদ সরকার (২৬) কে সদর থানার সজ্জনকান্দা এলাকা হতে আটক করে। আটককৃত রানাপদ সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে জানায়, পূজার ফুল সংগ্রহের জন্য সে গত ৮ অক্টোবর ভোর ৫ টার সময় মন্দির সংলগ্ন এলাকায় যায়। ফুল সংগ্রহ শেষে কৌতুহল বশতঃ সে মন্দিরে প্রবেশ করে। মন্দিরে প্রবেশের সময় সে গণেশের প্রতিমার সাথে ধাক্কা খায় এবং প্রতিমার মাথা ভেঙে ফেলে। এ সময় সে মন্ডপে থাকা বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা স্পর্শ করে। একপর্যায়ে সে অবচেতন মনে বিভিন্ন প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রানাপদ সরকার একজন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী। সে উপজেলা সমাজসেবা অফিস হতে প্রতি মাসে ৫শত টাকা ভাতা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হাজির করা হলে সে আদালতে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় আদালত তাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করার আদেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

‘মানুষ একটা ভাল নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় আছে’ -আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম

রাজবাড়ীতে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় প্রতিবন্ধির স্বীকারোক্তি

Update Time : 08:43:04 pm, Thursday, 10 October 2024

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অফিস সংলগ্ন সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ রানাপদ সরকার (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে। সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়ীয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হাজির করা হলে সে আদালতে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় আদালত তাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করার আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অফিস সংলগ্ন সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্দিরে কমিটির উদ্যোগে একটি অস্থায়ী দুর্গাপূজা মন্দির তৈরী করা হয়। ওই মন্দিরে দেবী দুর্গাসহ ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরী করা হয়। গত ৮ অক্টোবর রাত দেড় টা হতে ওইদিন বেলা ১১ টার মধ্যে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মন্দিরের ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমার অংশবিশেষ ভেঙ্গে ফেলে। যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করাসহ তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার জিডি করা হয়। পরে এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় গত ৯ অক্টোবর মামলা দায়ের করা হয়।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীনের সার্বিক দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী সদর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম মামলার রহস্য উদঘাটনের কাজে নামে। অনুসন্ধান ও তদন্তের একপর্যায়ে পূজা মন্ডপসহ সংলগ্ন স্থানের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণকালে কমলা রংয়ের টি-শার্ট এবং কালো ট্রাউজার পরিহিত একজন ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্স অভিযান পরিচালনা করে গত ৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টার সময় রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়ীয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে রানাপদ সরকার (২৬) কে সদর থানার সজ্জনকান্দা এলাকা হতে আটক করে। আটককৃত রানাপদ সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে জানায়, পূজার ফুল সংগ্রহের জন্য সে গত ৮ অক্টোবর ভোর ৫ টার সময় মন্দির সংলগ্ন এলাকায় যায়। ফুল সংগ্রহ শেষে কৌতুহল বশতঃ সে মন্দিরে প্রবেশ করে। মন্দিরে প্রবেশের সময় সে গণেশের প্রতিমার সাথে ধাক্কা খায় এবং প্রতিমার মাথা ভেঙে ফেলে। এ সময় সে মন্ডপে থাকা বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা স্পর্শ করে। একপর্যায়ে সে অবচেতন মনে বিভিন্ন প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রানাপদ সরকার একজন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী। সে উপজেলা সমাজসেবা অফিস হতে প্রতি মাসে ৫শত টাকা ভাতা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হাজির করা হলে সে আদালতে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় আদালত তাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করার আদেশ দেন।