রাজবাড়ীতে ম্যাজিষ্ট্রেটকে কুকুরে ধাওয়াকান্ডে অভিযোগ প্রত্যাহার
- আপডেট সময় : ১২:৩৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৮৬ বার পড়া হয়েছে
রাজবাড়ীতে বেওয়ারিশ কুকুরে ধাওয়া দেওয়ার জের ধরে মোঃ আফজাল খান (৩০) নামে এক কৃষককে বাড়ী থেকে ডেকে এনে আদালত ভবনে চেয়ারের সাথে রশি দিয়ে হাত বেঁধে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক পোটানোর ঘটনা ঘটে।
এ অভিযোগে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের মৃত আনছের খানের ছেলে নির্যাতনের শিকার মোঃ আবজাল খান বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগটি রবিবার রাতে প্রত্যাহার করেছে। চাপের মুখে না এলাকার জামাই হিসেবে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে কৃষককে প্রহৃতের এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিত কৃষক মোঃ আবজাল খান বলেন, এ ম্যাজিষ্ট্রেটের শশুর বাড়ী আমার এলাকায়। গত ৩০ জানুয়ারী পরিবার নিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট শশুর বাড়ী এলাকায় গিয়ে হাটাচলা করার সময় একটি বেওয়ারিশ কুকুর ধাওয়া করে। ওই কুকুরটি আমার বাড়ী এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। এতে করে তিনি রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আসাদকে কুকুর মালিককে ধরে আনতে নির্দেশ দেন। কয়েকদিন ধরেই থানার এসআই আসাদ আমাকে দেখা করতে বলেন। আমি ভয়ে দেখা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। পরে স্থানীয় মেম্বারকে দিয়ে এসআই আসাদের সাথে কথা বলি। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেঝ ভাই সাহেব আলী খানকে সাথে নিয়ে আসি। পরে আমাদেরকে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর কুকুরটি আমার নয় এবং আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি। তারপরও কোন কথা না শুনে আমার দুই হাত চেয়ারের সাথে পিঠমোড়া করে হাত বেঁধে চেয়ারের সাথে হামু দিয়ে কাঠের রুল দিয়ে পশ্চাৎদেশ, পিঠে সহ আঘাৎ করে। এতে পশ্চাৎদেশ ও পিঠে রক্ত জমাট নিলাফোলা রক্ত জমাট জখম হয়। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেন যে, ওই কুকুরটি যদি এলাকায় দেখা যায় এবং এ বিষয় নিয়ে কাউকে বলি তবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন। পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। পরিবারের লোকজনের সাথে আলোচনা করে রাত ৮ টার দিকে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এলাকার লোকজন অনেক করে ধরার কারণে ও গরীব মানুষ হিসেবে রবিবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগটি প্রত্যাহার করেছি।
আবজালের ভাই সাহেব আলী খান বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই খুব চাপ সৃষ্টি করছিল। গরীব মানুষ কি করবো। ভাইকে বলে এলাকার জামাই হিসেবে রবিবার রাতে থানায় গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছি।
আবজালের ভাতিজা মিলন খান বলেন, আমাদের এলাকার জামাই। একটি ভূল করেছে। এ কারণে জামাই হিসেবে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, রবিবার রাতে আবজাল, তার ভাই সাহেব আলী ও আবজালের স্ত্রী থানায় এসে লিখিত ভাবে তাদের দায়েরকৃত অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে। তবে চাপের মুখে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তাদের বিষয়, আমার জানা নেই।
রবিবার আদালতে গিয়ে জানাযায় রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেন আদালত করেননি। তিনি ছুটিতে আছেন।
তবে এ বিষয়ে একাধিক আইনজীবি সহ আদালতে কর্মরতদের কাছে জানতে চাইলে কেউ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।