9:39 am, Monday, 21 April 2025

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর অঢেল সম্পদ

সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির এ কর্মচারী তার অফিসের ডকুমেন্ট চুরি, টেন্ডারবাজি, জালিয়াতি, টেন্ডার ড্রপ করে তার পক্ষে থাকা সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া, সাধারণ শাখা থেকে প্রাক্কলনের অফিস কপি লিক করে প্রাক্কলনের রেট ঠিকাদারদের জানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছেন দোকানও। গত ২১ নভেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দেন মন্টু সাহা নামে মানিকগঞ্জের এক ব্যক্তি।
ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ বছরে আতিকুর রহমান কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ২০০৪ সালে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে যোগ দেওয়ার পর থেকে একই স্থানে কাজ করছেন তিনি। আতিকুর রহমানকে ম্যানেজ করা ছাড়া মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে অফিস স্টাফ ও কর্মকর্তাদের বেতন বিল পর্যন্ত প্রেরণ করা হয় না। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ জেলা টাঙ্গাইল শহরে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ১৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, টাঙ্গাইলে নিজের ও বউয়ের নামে ২৫ কাঠা জমি, বিভিন্ন ব্যাংকে নিজের এবং বউয়ের নামে কোটি টাকার এফডিআর, বউ ও আত্মীয়স্বজনের নামে শেয়ার মার্কেটে কোটি টাকার বিনিয়োগ। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই আতিকুর রহমানের কপাল খুলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিতেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের আশীর্বাদপুষ্ট বিথী কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে আতিকুর রহমান মানিকগঞ্জে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা করেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রতি টেন্ডার বাবদ তাকে অন্তত ৫ শতাংশ হারে টাকা দিতে হতো।
এ নিয়ে স্থানীয় অনেক ঠিকাদারের সঙ্গে আতিকের একাধিকবার বাগবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আতিককে দিয়ে টেন্ডার না করালে ঠিকাদারদের লটারি থেকে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেন। জানা গেছে, কয়েক দিন আগে আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মশিউর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, আলাউদ্দিন ও মোস্তফা নামে ভুক্তভোগী কয়েকজন ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

‘মানুষ একটা ভাল নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় আছে’ -আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর অঢেল সম্পদ

Update Time : 07:08:39 pm, Wednesday, 4 December 2024

সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির এ কর্মচারী তার অফিসের ডকুমেন্ট চুরি, টেন্ডারবাজি, জালিয়াতি, টেন্ডার ড্রপ করে তার পক্ষে থাকা সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া, সাধারণ শাখা থেকে প্রাক্কলনের অফিস কপি লিক করে প্রাক্কলনের রেট ঠিকাদারদের জানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছেন দোকানও। গত ২১ নভেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দেন মন্টু সাহা নামে মানিকগঞ্জের এক ব্যক্তি।
ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ বছরে আতিকুর রহমান কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ২০০৪ সালে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে যোগ দেওয়ার পর থেকে একই স্থানে কাজ করছেন তিনি। আতিকুর রহমানকে ম্যানেজ করা ছাড়া মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে অফিস স্টাফ ও কর্মকর্তাদের বেতন বিল পর্যন্ত প্রেরণ করা হয় না। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ জেলা টাঙ্গাইল শহরে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ১৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, টাঙ্গাইলে নিজের ও বউয়ের নামে ২৫ কাঠা জমি, বিভিন্ন ব্যাংকে নিজের এবং বউয়ের নামে কোটি টাকার এফডিআর, বউ ও আত্মীয়স্বজনের নামে শেয়ার মার্কেটে কোটি টাকার বিনিয়োগ। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই আতিকুর রহমানের কপাল খুলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিতেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের আশীর্বাদপুষ্ট বিথী কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে আতিকুর রহমান মানিকগঞ্জে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা করেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রতি টেন্ডার বাবদ তাকে অন্তত ৫ শতাংশ হারে টাকা দিতে হতো।
এ নিয়ে স্থানীয় অনেক ঠিকাদারের সঙ্গে আতিকের একাধিকবার বাগবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আতিককে দিয়ে টেন্ডার না করালে ঠিকাদারদের লটারি থেকে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেন। জানা গেছে, কয়েক দিন আগে আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মশিউর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, আলাউদ্দিন ও মোস্তফা নামে ভুক্তভোগী কয়েকজন ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।