11:13 pm, Sunday, 20 April 2025

রাজবাড়ীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসির আদেশ

রাজবাড়ীর কালুখালীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফাহিমা বেগম (৪১) নামে এক প্রবাসীকে ডেকে এনে হত্যার দায়ে মোঃ আবদুর রহিম মণ্ডল (৫৬) কে ফাঁসির আদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। ফাহিমা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের সেকেন ফকীরের মেয়ে। আর রহিম রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার জাগিরকয়া গ্রামের মৃত তাছের আলী মন্ডলের ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী রাজবাড়ীর সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় প্রদান করেন।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, ফাহিমা ও অভিযুক্ত রহিম মণ্ডল কাতারে থাকতেন। বছর তিনেক আগে তাঁরা দেশে আসেন। কাতার থাকাকালে আবদুর রহিমের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেন ফাহিমা। একটি ঝামেলার কারণে রহিম দেশে চলে আসতে বাধ্য হন। তখনো ফাহিমা কাতারে ছিলেন। পরে করোনার সময় ফাহিমাও দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পরও ফাহিমা ধারের টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। টাকা চাইলে নানা রকম টালবাহানা করতেন। একদিন টাকা আনতে রহিম ভাঙ্গায় যান। কিন্তু সেখানে ফাহিমা আগে থেকেই কয়েকজনকে দিয়ে রহিম শায়েস্তা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বুঝতে পেরে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। এ ঘটনায় ফাহিমার ওপর ক্ষুব্ধ হন আবদুর রহিম। তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফাহিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ে করলে পাওনা টাকা ফেরত দিতে হবে না শর্তে ফাহিমা রাজি হন। রহিমকে বিয়ে করার জন্য ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফাহিমা বাড়ি থেকে বের হন। ফাহিমাকে ভাঙ্গা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ফাহিমা মৃগী বাজারে আসেন। এরপর তাঁরা (ফাহিমা ও রহিম) হাঁটতে থাকেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাহিমাকে হত্যা করেন রহিম। এরপর তাঁর লাশ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামে একটি ধানক্ষেতে এনে ফেলে রাখেন। গত ৫ অক্টোবর ধানক্ষেত থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গত ৭ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে কালুখালী থানায় মামলা করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত ফাহিমারের মেয়ে মাকসুদা আক্তার বলেন, আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আমরা খুশি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এ্যাড. আহমেদ আলী মৃধা বাটু বলেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে এনে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত রহিমকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

‘মানুষ একটা ভাল নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় আছে’ -আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম

রাজবাড়ীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসির আদেশ

Update Time : 12:26:58 pm, Thursday, 24 October 2024

রাজবাড়ীর কালুখালীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফাহিমা বেগম (৪১) নামে এক প্রবাসীকে ডেকে এনে হত্যার দায়ে মোঃ আবদুর রহিম মণ্ডল (৫৬) কে ফাঁসির আদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। ফাহিমা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের সেকেন ফকীরের মেয়ে। আর রহিম রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার জাগিরকয়া গ্রামের মৃত তাছের আলী মন্ডলের ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী রাজবাড়ীর সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় প্রদান করেন।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, ফাহিমা ও অভিযুক্ত রহিম মণ্ডল কাতারে থাকতেন। বছর তিনেক আগে তাঁরা দেশে আসেন। কাতার থাকাকালে আবদুর রহিমের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেন ফাহিমা। একটি ঝামেলার কারণে রহিম দেশে চলে আসতে বাধ্য হন। তখনো ফাহিমা কাতারে ছিলেন। পরে করোনার সময় ফাহিমাও দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পরও ফাহিমা ধারের টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। টাকা চাইলে নানা রকম টালবাহানা করতেন। একদিন টাকা আনতে রহিম ভাঙ্গায় যান। কিন্তু সেখানে ফাহিমা আগে থেকেই কয়েকজনকে দিয়ে রহিম শায়েস্তা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বুঝতে পেরে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। এ ঘটনায় ফাহিমার ওপর ক্ষুব্ধ হন আবদুর রহিম। তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফাহিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ে করলে পাওনা টাকা ফেরত দিতে হবে না শর্তে ফাহিমা রাজি হন। রহিমকে বিয়ে করার জন্য ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফাহিমা বাড়ি থেকে বের হন। ফাহিমাকে ভাঙ্গা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ফাহিমা মৃগী বাজারে আসেন। এরপর তাঁরা (ফাহিমা ও রহিম) হাঁটতে থাকেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাহিমাকে হত্যা করেন রহিম। এরপর তাঁর লাশ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামে একটি ধানক্ষেতে এনে ফেলে রাখেন। গত ৫ অক্টোবর ধানক্ষেত থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গত ৭ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে কালুখালী থানায় মামলা করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত ফাহিমারের মেয়ে মাকসুদা আক্তার বলেন, আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আমরা খুশি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এ্যাড. আহমেদ আলী মৃধা বাটু বলেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে এনে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত রহিমকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।