রাজবাড়ীতে নির্যাতনের ভয়াবহতা বয়ে বেড়াচ্ছে সাবেক ছাত্রদল নেতা
- আপডেট সময় : ১১:৫৯:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
- / ২১৪ বার পড়া হয়েছে
পুলিশী বাঁধা উপেক্ষা করে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করাই কাল হয় রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিনুর রহমানের। এ কারণে তাকে ধরে নিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে অন্তকোষে ইট বেঁধে নির্মম নির্যাতন চালায়। বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনে জ্ঞান হারিয়ে যখন সে অসুস্থ হয়ে যাবার পরে হাস্পাতালে নিয়ে যায় এবং আবার নির্যাতন শুরু করে। এর ফলে তার মেরুদ- অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ ভাবেই তাকে একাধিক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ভারতের চেন্নাই অ্যাপোলো, ভেলোর সিএমসি হাসপাতালে একাধিকবার গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি ধিরে ধিরে শয্যাসায়ী হয়ে যায়। সেই অবস্থায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দুই জনের কাঁধে ভর করে গুলশান বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দেখা করেন। তারপর তার চিকিৎসার ভারগ্রহণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইবনে সিনা হাসপাতালে অপারেশন করিয়ে কৃত্রিম ডিক্স লাগানোর ব্যবস্থা করেন। তারপরও সুস্থ হতে পারেনি। প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সুস্থ ভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। সেদিনের নির্যাতনের চিত্র চোঁখে ভেসে উঠলেই আতকে ওঠেন। এ ভাবেই ভয়াবহ নির্যাতনের চিহৃ বয়ে বেড়াচ্ছে সাবেক ছাত্রদল নেতা তুহিন।
তুহিনুর রহমান, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তুহিনুর রহমান বলেন, ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারী তাকে অপহরণ, গুম ও চাঁদা আদায়ের জন্য নির্যাতনসহ খুনের চেষ্টা করে। তাকে নির্যাতন করাসহ ১০ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি করে। ৫ লক্ষ টাকা নেয় এবং বিভিন্ন মামলায় আদালতে সোপর্দ করে। দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করতে হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন। এখনো সোজা হয়ে দাড়াতে পারেন না। প্রায়ই অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল হাসপাতালে কাটাতে হয়। আমার সুস্থ্য জীবন ফিরিয়ে দেবে কে? আমি আমার সুস্থ্য জীবন ফেরত চাই। তিনি আরও বলেন, দেশের পরিবেশ ভালো হওয়ায় গত ২৫ আগস্ট রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সেই দিনের নির্যাতনে যারা সরাসরি জড়িত ও নির্দেশ দিয়েছিল তাদেরকেই আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলো, সাবেক রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম,
বালিয়াকান্দি থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সামা মোঃ ইকবাল হায়াত, বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হাকিম সাধন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি নায়েব আলী শেখ, নাছির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, নারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, নারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ কালাম, জিল্লুল হাকিমের ছেলে মিতুল হাকিম সহ অজ্ঞাতনামা ৩জন।
রাজবাড়ী জেলা বারের আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারক মৌসুমী সাহা মামলাটি আমলে নিয়ে বালিয়াকান্দি থানার ওসিকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন বলেন, ওই মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হাকিম সাধন কারাগারে রয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।