জহুরুল ইসলাম হালিম : মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫ উপলক্ষে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরার সময় ১১ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে পদ্মা নদীতে নৌ পুলিশের ফরিদপুর ও ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুনের দিক নির্দেশনায় দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহার সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়। আটককৃত জেলেদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে মৎস্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা আইন, ১৯৫০ (সংশোধিত ১৯৯৩) সালের ৫(২)(খ) ধারায় চারটি নিয়মিত মামলা দায়েরের করে রাজবাড়ী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত জেলেরা হলো, পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের কুকলি চর এলাকার মোহাম্মদ আলী মন্ডলের ছেলে মো. বিল্লাল মন্ডল (৩৭), পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকার মো. জয়নাল মোল্লার ছেলে মো. হালিম মোল্লা (২৪), পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের কাকশিমুল এলাকার মো. জামালের ছেলে মো. মামুন মন্ডল (২৪), রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের হাউলি জয়েরপুর এলাকার মো. কাদের দেওয়ানের ছেলে মো. আনোয়ার দেওয়ান (৩০), ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী উপজেলার কবিরপুর ইউনিয়নের দুদু মাতব্বরের ডাঙ্গী এলাকার মহোরদী মোল্লার ছেলে বিল্লাল মোল্লা (৫২), ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী উপজেলার কবিরপুর ইউনিয়নের দুদু মাতব্বরের ডাঙ্গী এলাকার হবি ফকিরের ছেলে আশিক ফকির (২০), পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের ধারাই এলাকার মো. আব্দুল্লাহর ছেলে রতন উল্লাহ (৩০), পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের ধারাই এলাকার বদর মন্ডলের ছেলে দৌলর উদ্দিন মন্ডল (৩০), পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ঢালার চর ইউনিয়নের ধারাই এলাকার হানেফ সরদারের ছেলে আলীম সরদার (২১), ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের নুরু মন্ডলের ডাঙ্গী এলাকার জলিল শেখের ছেলে লাবলু শেখ (৩২) এবং ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের নুরু মন্ডলের ডাঙ্গী এলাকার কিবার সরদারের ছেলে মো. রিমন সরদার (১৯) অভিযান শেষে জেলেদের হেফাজত ও নদী তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২৫ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল নৌ পুলিশের এসপি আবদুল্লাহ আল মামুনের উপস্থিতিতে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে জনসমক্ষে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃত ৫ কেজি ইলিশ মাছ স্থানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠান পায়াক্ট বাংলাদেশ নমে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অসহায় ও এতিম শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এদিকে, চলমান মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে এখন পর্যন্ত দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে মোট ৩৫টি ভ্রাম্যমান আদালত ও নিয়মিত মামলায় ৬০ জন জেলেকে গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের ওসি ত্রিনাথ সাহা। চলমান অভিযানে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার বর্গ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে তা জনসম্মুখে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং ২৬০ কেজি ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ও ৭টি নৌকা উদ্ধার করা হয়েছে।
নৌ পুলিশের এসপি আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পদ্মা নদীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। মা ইলিশ রক্ষায় জেলেদের প্রতি আইন অমান্য না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ-সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নৌ পুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজিদ হোসেন, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশিদুল ইসলাম, গোয়ালন্দ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট, দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি এসআই মো. লুৎফর রহমান, এসআই মেহেদী হাসান অপূর্ব প্রমূখ।
মন্তব্য করুন