স্টাফ রিপোর্টার : দুবাইতে মাদকসহ গ্রেপ্তার হওয়া প্রতিবেশীর উপকার করে চরম বিপাকে পড়েছেন গোয়ালন্দের মো. শাহিন সরদার (৪৮)। নিজে শ্রম, সময় ও টাকা খরচ করে গ্রেপ্তার হওয়া প্রতিবেশীর জামিন করিয়ে সেই প্রতিবেশীর পরিবার দ্বারা উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সম্প্রতি দুবাই থেকে দেশে ফেরা মো. শাহিন সরদার। তিনে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ময়ছের মাতুব্বার পাড়া মহল্লার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সরদারের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. শাহিন সরদার বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুবাইতে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছেন। কিছু দিন আগে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লা পাড়ার বাসিন্দা মুনিয়া বেগম (৪৭) তাকে ফোন করে কান্নাকাটি করে জানায়, তার ছেলে মুন্না গত ১ জুন দুবাইতে গিয়ে অবৈধ নাগরিক হিসেবে পুলিশের কাছে আটক হয়ে জেলে রয়েছে। তাকে জেল থেকে ছাড়ানো জন্য তার (শাহিন) সহযোগিতা চান। এসময় তিনি বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবেন বলে আশ^াস্থ করেন। এরপর তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে মুন্না মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর তিনি মুন্নার মাকে বলে দেন এ ব্যাপারে তিনি কোন সহযোগিতা করতে পারবেন না। পরবর্তীতে মুন্নার মা মুনিয়া বেগম তার (প্রবাসি শাহিন) মা’কে অনুরোধ করে তাকে (শাহিন) অনুরোধ করান, মুন্নাকে সহযোগিতা করার জন্য। মায়ের অনুরোধে তিনি মুন্নার জামিন করানোর জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেন। এতে তিনি শ্রম, সময় ও ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করেন। এসময় টাকা খরচের নানা প্রমান তিনি উপস্থাপন করেন।
প্রবাসি শাহিন সরদার আরো বলেন, মুন্নার পরিবার খরচ হওয়া টাকা ফেরত দিতে চাইলেও একটি টাকাও ফেরত দেননি। বরং পরিকল্পিত ভাবে আমার ও আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের সম্মান নষ্ট করার উদ্দেশ্যে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করেছেন। মুন্নার মা মুনিয়া বেগম তার অভিযোগে দাবি করেছেন যে, মুন্নাকে জেলমুক্ত করার জন্য তিনি (শাহিন সরদার) নাকি তাদের কাছ থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মুন্ন দুবাইতে অবৈধ নাগরিক নয়, বরং সে ৩শ গ্রাম গাঁজা ও নিষিদ্ধ আইসসহ গ্রেপ্তার হয়। বর্তমানে দুবাই আদালতে তার নামে মামলা চলমান রয়েছে এবং মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুবাই পুলিশ তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়নি।
প্রবাসী শাহিন সরদার সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, তার টাকা যাতে ফেরত দিতে না হয়, সেজন্যই তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে মুনিয়া বেগম মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুনিয়া বেগম জানান, তার ছেলে মুন্না রাতের খাবার আনতে গিয়ে আটক হয়। তার সাথে কুমিল্লার আরো একটি ছেলেও আটক হয়েছিল। আমরা শাহিনের সাথে যোগাযোগ করলে শহিন মামলা চালানো জন্য প্রতি জনের বাংলাদেশী টাকার ৭ লাখ টাকা করে লাগবে বলে জানায়। তার কথা মত আমরা ৭ লাখ টাকা করে মোট ১৪ লাখ টাকা শাহিনকে দেই। কিন্তু আমার ছেলের নিরোপরাধ প্রমানিত হয় এবং কুমিল্লার ওই ছেলের ২০ বছরের সাজা হয়েছে। বরং আমার ছেলে বিনা অপরাধে জেল খাটার জন্য ওই দেশী সরকারের কাছ থেকে ভাতা পেয়েছে, যা শাহিন আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ঘটনায় মুনিয়া বেগম নামে এক নারীর অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য করুন