রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত যৌথ মালিকানাধীন ভূসম্পত্তিতে আদালতের স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাস কো) নির্দেশনা এবং স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালার (নিন্জু আগারওয়ালা) বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ১ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী উত্তরাধিকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক সাথী দাসের কাছে জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণকাজ বন্ধসহ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার ৮৭নং মৌজা উত্তর উজানচরের ১০১১/২ খতিয়ানের এসএ (১০২৭) এর বিভিন্ন দাগের জমি তাঁদের পিতামহ মৃত ব্রজলাল আগরওয়ালার নামে ছিল। উত্তরাধিকারসূত্রে তাঁদের ভাগে এলেও এখনো জমির সুনির্দিষ্ট বণ্টন হয়নি। এ অবস্থায় তাঁদের কাকা নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা প্রভাব খাটিয়ে যৌথ সম্পত্তিতে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেন।
বিষয়টি টের পেয়ে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে চলতি বছরের ২১ আগস্ট ইউএনও উভয় পক্ষকে শুনানির জন্য তলব করেন। শুনানি শেষে বিরোধপূর্ণ স্থানে সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক যৌথভাবে আবারও নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশনা জারি করেন।
এছাড়া ২০ অক্টোবর সহকারী জজ আদালত (গোয়ালন্দ) মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। আবেদনকারীরা এ আদেশের অনুলিপি প্রশাসনকে সরবরাহ করেছেন বলেও জানান।
আদালত ও প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করেই নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী ডা. রতন কুমার আগরওয়ালা, ডা. বিমল কুমার আগরওয়ালা এবং ইঞ্জিনিয়ার শ্যামসুন্দর আগরওয়ালার।
তারা বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থা আদেশ এবং ইউএনও ও পৌর প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষ বেআইনিভাবে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের ন্যায্য উত্তরাধিকারভোগের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমরা জরুরিভিত্তিতে এই অবৈধ নির্মাণকাজ স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ইউএনও, পৌর প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বলেও লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি আদালতের কোনো আদেশ অমান্য করিনি। আমার বৈধ জায়গাতেই কাজ করছিলাম। ভাতিজারা অভিযোগ দেওয়ার পর আমি ইউএনও’র সঙ্গে কথা বলেছি এবং আইনের প্রতি সম্মান রেখেই কাজ বন্ধ রেখেছি।
তিনি আরও দাবি করেন, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের সঙ্গে আলাপের পর তিনি ৪–৫ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস পেয়েছেন এবং সে অনুযায়ী এখন অপেক্ষায় রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাথী দাস বলেন, আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এখানে আদালতের আদেশ রয়েছে কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে। তাই আদালতের আদেশ অমান্য করে কাজ করার এখতিয়ার কারও নেই। একপক্ষ অভিযোগ করায় প্রতিপক্ষকে ডেকে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন